আজ 25 ই এপ্রিল ডি.এন.এ দিবস
আজ 2️⃣5️⃣ ই এপ্রিল
ডি.এন.এ দিবস ৷ ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক এসিড (ইংরেজি: DNA) একটি নিউক্লিক এসিড যা জীবদেহের গঠন ও ক্রিয়াকলাপ নিয়ন্ত্রণের জিনগত নির্দেশ ধারণ করে।
ডি এন এ কী?-⬇️
এটা একটা বিরাট বিষয়। যদি একটু সহজ করে বলতে চাই, ডি এন এ খুব ছোট্ট একটা কণা, যা বাস করে প্রতিটা জীবিত জীবের শরীরের কোষের ভিতরে। তবে কোষের মধ্যেই যে বাস করে তা নয়। আমরা যদি শরীরকে একটা বিল্ডিং ভাবি আর কোষগুলোকে এক একটা ইট। তাহলে ডি এন এ হলো সেই ইটের একটি কণা। শুধু কণা বললেও আসলে বেশি বলা হয়। কারণ কোষের মধ্যে ক্রোমোজোম থাকে। সেই ক্রোমোজমে ডিঅক্সিরাইবো নিউক্লিক এসিড থাকে যাকে ছোট করে আমরা বলি ডি এন এ।
আজ কেন ডি এন এ দিবস?⬇️
–১৯৫৩ সালে এপ্রিল মাসের ২৫ তারিখে নেচার নামে একটি জার্নালে সর্বপ্রথম এই ডি এন এ এবং এর ডাবল হ্যালিক্স মডেলের কথা প্রকাশিত হয়। এর আগে বিজ্ঞানী জেমস ওয়াটসন আর ফ্রান্সিস ক্রিক অনেক দীর্ঘ সাধনার পরে এই মডেল আবিষ্কার করেছিলেন। এত বিশাল সময়কে তো আর উল্লেখ করা সম্ভব নয়, তাই এই একটি দিন বেছে নেওয়া হয় সেই বিশাল গবেষণার প্রতি সম্মান জানানোর জন্য। কীভাবে উৎযাপন করা যায়?–ডি এন এ দিবস আমাদের মতো ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের হিসেবে অনেক বড় বিষয়। তবে তাতে কী? আজকে আমরা ছোট বলে কী বড় হবো না? তাহলে আজকে নাহয় ছোট করেই ডি এন এ র কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য জানি।
⚡ডি এন এ এর কাজ কি?-⬇️
✔️ডিএনএ-এর তিনটি স্বতন্ত্র কাজ রয়েছে- জেনেটিক্স, ইমিউনোলজিক্যাল এবং স্ট্রাকচারাল- যেগুলো সুগার ফসফেট ব্যাকবোন এবং বেসগুলির উপর বিভিন্নভাবে নির্ভরশীল।
✔️ডিএনএ-তে এমন নির্দেশাবলী রয়েছে যা একটি জীবের বৃদ্ধি, বিকাশ এবং প্রজননের জন্য প্রয়োজনীয়।
✔️ক্রোমোজোমের গাঠনিক উপাদান হিসেবে কাজ করে।
✔️বংশগতির একক ‘জিন’ বহন করে।
✔️বংশানুক্রমে এক জীব থেকে আরেক জীবে বৈশিষ্ট্য বহন করে।
✔️ভিন্ন দুইটি জীবের সমন্বয়ে নতুন বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন জীবের ভূমিকা পালন করে।
⚡ডি এন এ দেখতে ঠিক কেমন ?⬇️
ডি এন এ’র সবচেয়ে সুন্দর বিষয় হচ্ছে ডি এন এর গঠন। ডি এন এর গঠন খুবই মজার। চলুন তবে, ডি এন এ- র দু’ধরনের গঠন সম্পর্কেই কিছুটা জেনে নেয়া যাক।
➡️ডিএনএ-এর ভৌত গঠন-
J.D. Watson এবং Francis HC.Crick ডিএনএ অণুর গঠনের ডাবল হেলিক্স মডেল প্রস্তাব করেন।
১। DNA দ্বিসূত্রক, বিন্যাস ঘুরানো সিড়ির ন্যায়। ????
২। সিঁড়ির দুদিকের ফ্রেম তৈরি হয় সুগার ও ফসফেট এর পর্যায়ক্রমিক (Alternate) সংযুক্তির মাধ্যমে।
৩। দু’দিকের ফ্রেমের মাঝখানের প্রতিটি ফ্রেম তৈরি হয় একজোড়া নাইট্রোজেনাস বেস দিয়ে (A=T, G=C)।
৪। দুটি বেস হাইড্রোজেন বন্ড দিয়ে যুক্ত হয়। কাজেই সিড়ির বাইরের দিকে থাকে ফসফেট এবং ভেতরের দিকে থাকে নাইট্রোজেনাস বেস।
৫। সিড়ির দু’পাশের ফ্রেম পরস্পর উল্টোভাবে অবস্থান করে। এ ধরনের বিন্যাসকে অ্যান্টিপ্যারালেল (Antiparallel)বিন্যাস বলে।
৬। এক ফ্রেমের গুয়ানিন অপর পাশের ফ্রেমের সাইটোসিনের সাথে তিনটি হাইড্রোজেন বন্ড দিয়ে যুক্ত হয় (G=C)। এক ফ্রেমের অ্যাডিনিন অপর পাশের ফ্রেমের থাইমিনের সাথে দুটি হাইড্রোজেন বন্ড দিয়ে যুক্ত থাকে (A=T)।
৭। সিঁড়ির (প্রকৃত পক্ষে ডবল হেলিক্স-এর) প্রতিটি ঘূর্ণন ৩৪A’ দূরত্ব বিশিষ্ট এবং এ দূরত্ব ১০ টি মনােনিউক্লিয়ােটাইড দিয়ে তৈরি হয়। কাজেই প্রতিটি মনােনিউক্লিয়ােটাইডের দৈর্ঘ্য ৩.৪A`।
➡️ডিএনএ-এর রাসায়নিক গঠন-
১। পাঁচ কার্বনবিশিষ্ট ডিঅক্সিরাইবোজ সুগার (কার্বনের ২নং স্থানে অক্সিজেন অনুপস্থিত বিধায় ডিঅক্সি বলা হয়),
২। ফসফোরিক অ্যাসিড
৩। নাইট্রোজেনঘটিত ক্ষারক (অ্যাডিনিন, গুয়ানিন, সাইটোসিন এবং থাইমিন)।
ডি এন এ নিয়ে কিছু ইন্টারেস্টিং তথ্য⬇️
➡️আপনার দেহের সব কোষ থেকে পাওয়া ডিএনএ কে যদি সোজা করা হয় (কুণ্ডলী এবং প্যাঁচ খুলে দেয়া হয় ) তবে তার দৈর্ঘ্য হবে সূর্য থেকে পৃথিবীতে ৬৭ বার আসা যাওয়ার সমান।
➡️ডি এর এ’র সিঁড়ির ন্যায় পঁ্যাচানো সর্পিলাকার গড়নের কারণে এটি সহজেই ভাজ হয়ে সংকুচিত হয়ে কিছুর মধ্যে থাকতে পারে। এরুপ গড়ন না হলে কিন্তু ডি এন এর কোষে থাকাই হতো না। কারণ মানুষের গড় উচ্চতা ই হয় সাড়ে পাঁচ ফুটের মতো। এদিকে এক একটি ডি এন এ’ ই ছয় ফুটের উপরে লম্বা হয়। এই ভাজ করা গড়নটার নাম বিজ্ঞানীরা দিয়েছেন, ডাবল হ্যালিক্স মডেল।
➡️️ মানুষের শরীরে ৫-৮% ভাইরাল ডিএনএ রয়েছে। ️ মানুষ এবং শিম্পাঞ্জি,গরিলার ডিএনএর মাঝে পার্থক্য মাত্র ১%। ️ সমস্ত মানুষের মধ্যে প্রায় ৯৯.৯৯% ডিএনএ অভিন্ন।
➡️আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে একটি অমরত্ব ড্রাইভ রয়েছে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের ডিএনএ রয়েছে।
➡️ডিএনএ নিজেই নিজের প্রতিলিপি তৈরি করতে পারে এবং নিজেই নিজেকে নকল করতে পারে যার কারণে মানব অস্তিত্ব টিকে আছে।
সর্বোপরি বলা যেতে পারে, ডি এন এ মানব বিজ্ঞানের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি একটি ডাটা ব্যাংক কারণ এতে এত পরিমাণ তথ্য জমা থাকে যে তা লিখতে গেলে হয়তো মিলিয়ন কপি বিশ্বকোষ লেখা যাবে। আপনার যাবতীয় সকল তথ্য এবং আপনার পূর্ব পুরুষের সকল তথ্য এতে আছে।
যেমন আপনার ঠান্ডা লেগেছে? আপনি এর থেকে মুক্তি পেলেন। কিন্তু কিভাবে??? হাজার বছর আগে আপনার কোন পূর্ব পুরুষের ডি এন এ অ্যান্টিবডি ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস এর সাথে যুদ্ধ করতে শিখেছিল যা আপনার থাইমাস গ্ল্যান্ড এ সংরক্ষিত আছে। আপনার ইমিউন সিস্টেম আপনার সকল পূর্বপুরুষ (আদম আঃ পর্যন্ত) এর সকল তথ্য সম্বলিত। এক কথায় বলতে গেলে এর দ্বারা যে কত কিছু করা সম্ভব তা বলে শেষ করা যাবেনা ক্লোনিং, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে শুরু করে অপরাধী বা লাশ শনাক্তকরণ পর্যন্ত অসংখ্য কাজ করা সম্ভব যা স্বল্প পরিসরে লিখে শেষ করা যাবে না।
#CUSS
#DNA_DAY
References:
1.https://obakpathshala.com
2.https://bigganjatra.org/basic-biology-01
3.https://www.dailyprottoy.com
4.https://bigganblog.org
????Content Credit :
✏️Written By :
Sazzad Ahmed Bhuiyan
General Member, CUSS
Team: Diplodocus
Institute of Marine Science
Session: 2018-2019
Poster Credit :
Retu Pal Kana
General Member, CUSS
Team : Phoenix
Department of Fisheries
Session : 2019-20