বিশ্ব নদী দিবস
আজ ২৪ শে সেপ্টেম্বর, সেপ্টেম্বর মাসের শেষ রোববার পালিত হচ্ছে বিশ্ব নদী দিবস। নদী সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে প্রতিবছরই সেপ্টেম্বর মাসের শেষ রোববার এ দিবস পালন করা হয়।
যে দেশ সুপ্রবাহিনী নদীদের দাক্ষিণ্যে পুষ্ট তাকে নদীমাতৃক দেশ বলা হয়। প্রতি বছর এই দিনে বিশ্ব নদী দিবস পালিত হবার পিছনে রয়েছে নদীর প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসার এক গল্প। ১৯৮০ সালের সেপ্টেম্বর মাসের শেষ রোববার সাপ্তাহিক ছুটির দিন ব্রিটিশ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক তরুণ শিক্ষক এবং নদীপ্রেমিক মার্ক অ্যাঞ্জেলো তাঁর কিছু ছাত্রছাত্রী ও বন্ধুকে নিয়ে একটি নদীতে ‘ ক্লিন আপ ‘ বা পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালান। নদীটি রাফটিং(খরস্রোতা নদীতে বৈঠা চালিয়ে যাওয়া) এর জন্য বিখ্যাত জনপ্রিয় ছিল। কিন্তু যারা অংশ নিতেন তাদের খাবারের প্যাকেট, বিনোদনের উপকরণ, রাফটিংয়ের যন্ত্রাংশ প্রভৃতি নদীতেই ফেলা হত। মার্ক অ্যাঞ্জেলো ও তাঁর দল সেগুলো পরিষ্কার করেন। তখন ও তাঁরা হয়তো জানতেন না, একটি ইতিহাস তৈরী হতে যাচ্ছে। পরের বছর গুলোতে দিবসটির উদযাপন ক্রমেই ছড়িয়ে পড়তে থাকে ব্রিটিশ কলাম্বিয়া রাজ্য হয়ে ক্রমে পুরো কানাডা, নর্থ আমেরিকা, সাউথ আমেরিকা, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া। ২০০৫ সালে এসে জাতিসংঘ দিবসটি সমর্থন করে। এবং ২০১৫ সাল পর্যন্ত ‘ ওয়াটার ফর লাইফ ডিকেড ‘ কর্মসূচির অংশ করে নেয়।

সভ্যতার বিকাশ ঘটেছে নদীকে কেন্দ্র করেই। যেমন – সিন্ধু নদীর পাড়েই গড়ে উঠেছে হিন্দু সভ্যতা। আবার মিশরের নীলনদকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে মিশরীয় সভ্যতা। ইতিহাস ঘাটলে এমন আরও অনেক নদী কেন্দ্রিক সভ্যতার নিদর্শন পাওয়া যাবে। ঠিক তেমনভাবে আমাদের পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র বাংলাদেশের প্রাণ।
বাংলাদেশে সীমান্তবর্তী নদী রয়েছে ৫৮ টি এবং এই নদী গুলো আমাদের ভৌগোলিক যোগাযোগ কে করেছে সহজতর। যা আমদানি, রপ্তানিকৃত মালামাল আনা নেওয়াতে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এছাড়াও নদী দ্বারা আন্তঃজেলা পরিবহন সহজতর হয়। এদেশের সব জেলা রেলপথ বা সড়কপথে যুক্ত নয়। অনেক নদী ওই জেলাগুলোকে নৌ-পথের সঙ্গে যুক্ত করেছে। জল পরিবহন ব্যবস্থার খরচ অন্য যেকোনো পরিবহনের তুলনায় কম। আমাদের দেশের মোট নৌ-পথের দৈর্ঘ্য ৯৮৩৩ কিলোমিটার। যার মধ্যে ৫৪০০ কিলোমিটার সর্বদা ব্যবহার যোগ্য।
নদীগুলো পলি নিয়ে আসে যা আমাদের জমিকে উর্বর করে তোলে। বন্যার সময় নদী সেসব পলি জমিতে বয়ে নিয়ে যায়। এটি জমির প্রাণশক্তি বাড়ায় এবং উৎপাদন বাড়ায়। অর্থাৎ বলা চলে নদী আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাহায্য করে। প্রাচীন কাল থেকেই প্রচলিত আছে মাছে ভাতে বাঙ্গালী। বাঙালিদের খাদ্য তালিকায় মাছের বিশাল চাহিদা মেটায় নদীতে উৎপাদিত মাছ। এছাড়া মৎস সম্পদ রপ্তানি করেও আমরা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করি। এছাড়াও সেচ প্রকল্পের আওতায় কৃষকরা নদীর পানির উপর নির্ভরশীল। তাই বলা চলে কৃষি কাজেও রয়েছে নদী গুলোর বিশাল প্রভাব।
নদীগুলোর অবদানের মধ্যে একটি অবদানের কথা উল্লেখ না করলেই নয়। এটি হচ্ছে জলবিদ্যুৎ। কাপ্তাইয়ে কর্ণফুলী নদীর উপর একটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প আছে। এটি আমাদের জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিডে অবদান রাখছে।



References :
Content Credit :
Written by:
Diba Biswas
General member of CUSS
Team: Ancient Heroes
Department of Zoology
Session: 2021-22
Poster Credit :
Fahmida Binte Mohsin
General Member of CUSS
Team : Ancient Heros
Institute of Forestry and Environmental Sciences
Session : 2021-22