বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস-২০২৩

“Pharmacy strengthening health systems” এই প্রতিপাদ্যে আজ “বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস-২০২৩” পালিত হচ্ছে। প্রতি বছর ২৫ সেপ্টেম্বর এই দিনটি উদযাপন করা হয় যা International Pharmaceutical Federation(FIP) কর্তৃক ২০০৯ সালে গৃহীত হয়েছিল।

COVID-19 সংকট থেকে পুনরুদ্ধার আমাদেরকে বুঝিয়ে দেয় ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যসেবার প্রয়োজন মেটাতে ফার্মাসিস্টদের ভূমিকা কতটা জরুরি! বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবসের ক্যাম্পেইন স্বাস্থ্যখাতে ফার্মাসিস্টদের ভূমিকা, দায়িত্ব ও গুরুত্ব সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর সুযোগ দেয় এবং সেইসাথে স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কিত সমস্যাগুলো সমাধানের ক্ষেত্রে তাদের বুদ্ধিমত্তা উপস্থাপনের সুযোগ তৈরি করে দেয়। COVID-19 স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সমর্থনে ফার্মেসি পেশার সক্ষমতা অনস্বীকার্য, যা এখন প্রমাণিত।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মহামারী চলাকালীন ফার্মাসিস্টরা কোভিড পরীক্ষা, টিকা, চিকিৎসা এবং রোগীর যত্নে ৩৫০ মিলিয়নেরও বেশি ক্লিনিক্যাল সেবা প্রদান করেছে।

আমাদের দেশীয় প্রেক্ষাপটে প্রয়োজনীয় ঔষধ সরবরাহে বিরামহীন কাজ করেছে এবং এখনও করছে ফার্মাসিস্টরা। দূর্ভাগ্যবশতঃ ক্লিনিক্যাল ফার্মাসিস্ট নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি হলেও তা আটকে আছে। উন্নত দেশের মতো বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবার পরিপূর্ণতা অর্জনে ফার্মাসিস্টদের ভূমিকা করোনা মহামারীতে দেশের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি বুঝিয়ে দিয়েছে।

প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের ফার্মাসিউটিক্যাল এসোসিয়েশন(IPA) কয়েক বছর যাবৎ উক্ত দিবসটির শক্তিশালী সমর্থক। এমনকি এই সংস্থাটি স্বাস্থ্যসেবার পরিপূর্ণতা এবং ফার্মাসিস্টদের সুযোগ সঞ্চারণে FIP কে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে চলেছে।

কার্যকরী স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বাস্তবায়নে প্রয়োজন ঔষধ ও প্রযুক্তির সহজলভ্যতা এবং নির্ভরযোগ্য সরবরাহ, প্রশিক্ষিত এবং অনুপ্রাণিত স্বাস্থ্যসেবা কর্মী, ভাল অবকাঠামো, প্রমাণ-ভিত্তিক নীতি, শক্তিশালী পরিকল্পনা এবং পর্যাপ্ত তহবিল।

নিঃসন্দেহে, একটি নিরাপদ সাপ্লাই চেইন এবং ওষুধের যথাযথ ব্যবহারের জন্য ফার্মেসি পেশা তথা ফার্মাসিস্টদের ভূমিকা অপরিহার্য। সরকার কর্তৃক এই খাতে তহবিল বাড়ানো এবং উন্নত পরিবেশ নিশ্চিত করা সময়ের দাবি, এমনকি FIP এর আহ্বান।

বিশ্বস্বাস্থ্যকে সমর্থনে ফার্মাসিউটিক্যাল অনুশীলন, বিজ্ঞান এবং শিক্ষার অগ্রগতিতে সক্ষমতা অর্জন FIP এর লক্ষ্য; উদাহরণস্বরূপ কমিউনিটি ফার্মেসির কথা বলা যায়। এই সেক্টরটি স্বাস্থসেবাকে শক্তিশালী করতে বিভিন্ন পরামর্শ, তথ্য এবং শিক্ষা, পরীক্ষা এবং সুপারিশ প্রদান, টিকা প্রদান, পলিমেডিকেশন নির্ধারণ করে। কমিউনিটি ফার্মাসিস্টের কাজ স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় চাপ এবং সময় দু’টোই কমাতে পারে। ওষুধের বিশেষজ্ঞ হিসেবে ফার্মাসিস্টকে ওষুধ লিখার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে। ডায়াবেটিসের মতো দীর্ঘমেয়াদী রোগীর চিকিৎসায়ও ফার্মাসিস্টরা দক্ষতা রাখে। ফার্মাসিউটিক্যাল অনুশীলন নিশ্চিত করার মাধ্যমে এই সকল সুবিধা পাওয়া সম্ভব। সার্বজনীন স্বাস্থ্য কভারেজ অর্জনে সমস্ত দেশ এবং অঞ্চলে ফার্মেসি পেশার অগ্রগতি প্রয়োজন।

সার্বজনীন পরিপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ফার্মেসি পেশার অন্তর্ভুক্ত সকল সেক্টরে ফার্মাসিস্ট নিয়োগ জরুরি। আমাদের দেশে ৯০-৯৫% ফার্মাসিস্ট ওষুধ কোম্পানিতে কাজ করে,কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ৫৫% ফার্মাসিস্ট কাজ করবে “কমিউনিটি ফার্মাসিস্ট” হিসেবে। দিনটির উদযাপন স্বাস্থ্যের উন্নতিতে এর মূল্য এবং সম্ভাবনাকে জানান দেয়।