বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস



বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবসটি প্রথম ১৯৯২ সালে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য সংস্থা দ্বারা মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সমস্যাগুলির বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং মানসিক স্বাস্থ্যকে ঘিরে সামাজিক কুসংস্কার কমানোর প্রচেষ্টায় পালিত হয়েছিল। তারপর থেকে, সারা বিশ্বের মানুষ মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতার উপর গুরুত্বারোপ করতে প্রতিবছর পালন করে আসছে।

“মানসিক স্বাস্থ্য একটি সর্বজনীন মানবাধিকার।”-এই প্রতিপাদ্যে পালিত হতে যাচ্ছে এই বছরের বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস।
এই বছরের উদযাপনের প্রতিপাদ্য প্রত্যেকের মানসিক সুস্বাস্থ্যের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেয, সেইসাথে আর্থ-সামাজিক অবস্থাভেদে নির্বিশেষে সকল ব্যক্তির জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পরিষেবাগুলির বৃহত্তর সহজলভ্যতার উপর জোর দেয়। প্রাথমিক লক্ষ্য হল, প্রত্যেকের মানসিক সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান সুনিশ্চিত করা।

বাংলাদেশের জাতীয় স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যৌথ উদ্যোগে ২০২১ সালে পরিচালিত একটি জরিপে দেখা গেছে, দেশে বয়স্কদের মধ্যে ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ কোন না কোন সময় মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। দেশের জনসংখ্যার হিসাবে এই সংখ্যা তিন কোটির বেশি।
কিন্তু বাংলাদেশে এই রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে পারেন, এমন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র এক হাজারের কিছু বেশি।ফলে একদিকে যেমন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, হাসপাতালে সংশ্লিষ্ট বিভাগ বা সেবার ঘাটতি রয়েছে, তেমনি এই রোগের চিকিৎসা নিতে রোগী বা তাদের স্বজনদের মধ্যে অসচেতনতা ও অনীহা কাজ করে।অনেকে লোকলজ্জার ভয়ে রোগের কথা লুকিয়েও রাখতে চান।

১)দ্রুত প্রতিরোধ- মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাগুলির বৃদ্ধি রোধে প্রাথমিক স্বীকৃতি বা শনাক্তকরণ এবং হস্তক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ। মানসিক অসুস্থতার লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি সম্পর্কে জনসাধারণকে শিক্ষা দেওয়া এবং সতর্ক করা যাতে যখন তাদের নিজেদের বা তাদের পরিচিত কারো এই বিষয়ে সহায়তা প্রয়োজন, তাদের তারা এইধরনের রোগগুলো শনাক্ত করতে সাহায্য করতে পারে।
২)সহায়ক পরিবেশ তৈরি করা- মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা এবং সমর্থন প্রচার করা স্কুল, কর্মক্ষেত্র এবং সম্প্রদায়গুলিতে আরও সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতে সহায়তা করতে পারে। এটি এমন একটি সংস্কৃতিকে লালন করতে সাহায্য করে যা মানসিক স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দেয় এবং প্রয়োজনে ব্যক্তিদের সাহায্য চাইতে উৎসাহিত করে।
৩)মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত গোঁড়ামি দূরীকরণ- মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা প্রচারের প্রচেষ্টা মানসিক অসুস্থতাগুলিকে ঘিরে তৈরি হওয়া কুসংস্কার ও গোঁড়ামি কমাতে সাহায্য করে। এটি ব্যক্তিকে বিচার বা বৈষম্যের ভয় ছাড়াই তাদের প্রয়োজনীয় সাহায্য চাইতে উৎসাহিত করতে পারে।

১)বিষণ্ণতা- এটি এমন একটি অবস্থা যা দুঃখ, হতাশা এবং অসহায়ত্বের তীব্র অনুভূতি সৃষ্টি করে। বিষণ্ণতায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা ক্লান্তি, ক্ষুধা পরিবর্তন এবং মনোনিবেশ করতে অসুবিধা সহ বিভিন্ন উপসর্গ অনুভব করে থাকেন।
২) দুশ্চিন্তা- এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে অতিরিক্ত উদ্বেগ বা ভয় লক্ষ্য করা যায়। লক্ষণগুলির মধ্যে অস্থিরতা, বিরক্তি এবং ঘুম ও মনোযোগ দিতে অসুবিধা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
৩) বাইপোলার ডিসঅর্ডার- দীর্ঘসময় ধরে একজন ব্যক্তির মুডের, আবেগের বা মানসিক অবস্থার বিপরীতমুখী পরিবর্তন ঘটতে থাকলে তাকে বাইপোলার ডিসঅর্ডার বলে বর্ণনা করে থাকেন চিকিৎসকরা।বাইপোলার ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তিরা শক্তির মাত্রা এবং আচরণে পরিবর্তন অনুভব করতে পারে।
৪) স্কিজোফ্রেনিয়া- এটি একটি গুরুতর মানসিক ব্যাধি যা একজন ব্যক্তির স্পষ্টভাবে চিন্তা করার, অনুভব করার এবং দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় কাজগুলো সঠিকভাবে করার ক্ষমতাকে ব্যহত করে।
৫) অবসেসিভ- কম্পাল্সিভ ডিসঅর্ডার- বাংলায় এই ব্যাধিটিকে আমরা শুচিবায়ু হিসেবে জানি। এটি একজন ব্যক্তিকে পুনরাবৃত্তিমূলক এবং বাধ্যবাধকতামূলক আচরণ করতে পরিচালিত করে যা তাদের দৈনন্দিন কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটায়।




Aditta Das
General Member, CUSS
Team : Odyssey
Department Of Applied Chemistry and Chemical Engineering
Session : 2021-22

Tanvira Islam Ritu
General Member, CUSS
Team : Eclipse
Department Of Soil Science
Session : 2019-20
Tag:cuss