বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস
7️⃣ আজ ৭ই এপ্রিল
বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস। এ দিনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।প্রতি বছর একটি নির্দিষ্ট প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে আন্তর্জাতিক ও স্থানীয়ভাবে দিবসটি পালন করা হয়। ১৯৫০ সালের ৭ এপ্রিল থেকে বিশ্বজুড়ে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।
১৯৪৬ সালে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর একটি অন্তর্বর্তীকালীন কমিশন গঠন করা হয় যার লক্ষ্য ছিল সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রূপরেখা তৈরী করা। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে ১৯৪৮ সালের ৭ এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত হয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ডব্লিউএইচও মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং নিরাপত্তার দিকগুলো নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। ১৯৪৮ সালে ডব্লিউএইচও এর প্রথম বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলনে ৭ এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হলে তা ১৯৫০ সালে কার্যকর হয়। সর্বপ্রথম বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস পালন করা শুরু হয় ১৯৫০ সালের ৭ এপ্রিল থেকে।
প্রতিবছর একটি প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে আন্তর্জাতিক ও স্থানীয়ভাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন করা হয়।দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং স্বাস্থ্য বিষয়ে কাজ করে এমন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাসমূহ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
প্রচলিত একটি কথা আছে, স্বাস্থ্যই সম্পদ। ছোট বেলা এই বিষয় সম্পর্কে রচনা লিখেনি এমন মানুষ পাওয়া খুব দুর্লভ। কিন্তু মানুষ এখনো সেই অসচেতনতা ও উদাসীনতার দেয়াল ভেদ করে বেরিয়ে আসতে পারে নি। যার কারণে করোনা ভাইরাস গোগ্রাসে ভক্ষন করেছে লক্ষাধিক মানুষের প্রাণ। এই অসচেতনতার আরও ভয়াবহ প্রেক্ষাপট হতে পারে পৃথিবীতে করোনার চতুর্থ ঢেউয়ের মাধ্যমে। তাই প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ডব্লিউএইচও মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং নিরাপত্তার দিকগুলো নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
করোনাকালীন সময়ে ২০২১ এর এই দিবসটির থিম ছিল :
“Building a Fairer and Healthier World for Everyone”। অর্থাৎ সকলের জন্য আরও ভাল এবং স্বাস্থ্যকর পৃথিবী তৈরি করা। এই পরিস্থিতিতে সকলেই যেন স্বাস্থ্যের প্রতি বিশেষ গুরত্ব দেন, সেই ব্যাপারেই সকলকে বার্তা দিতে চেয়েছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
স্বাস্থ্যই সুস্থ ও সতেজ জীবনের চাবিকাঠি এই উদ্দেশ্য কে সামনে রেখে ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যকে সফল করার উদ্দেশ্যে কিছু দিক নির্দেশনা মুলক বিষয় বস্তু তুলে ধরেন। এগুলো হলোঃ-
১.সব রাষ্ট্রীয় নীতি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী মানবকল্যাণ এবং পরিবেশগত স্থিতিশীলতাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
২. তেল-গ্যাসের মতো জীবাশ্ম জ্বালানির বদলে ব্যবহার করতে হবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি।
৩. ওহায়ো-এর বায়ু মানের নির্দেশিকা বাস্তবায়ন করতে হবে।
৪. শরীরচর্চা ও মানসিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত করে এমন সবুজ স্থান তৈরি করতে হবে।
৫. WHO-র সবুজ ঘোষণাপত্র গ্রহণ এবং সে অনুযায়ী অঙ্গীকার করতে হবে।
৬. সব পরিবেশ ধূমপানমুক্ত রাখতে হবে।
৭. বর্জ্য ও প্লাস্টিক হ্রাস নীতি তৈরি করে দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
৮. শ্রমিকদের জন্য নিরাপদ পানি নিশ্চিত করতে হবে।
৯. পাবলিক স্পেসে অস্বাস্থ্যকর খাবার ও পানীয়ের বাজারজাতকরণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
১০. স্থানীয় উৎপাদকদের কাছ থেকে তাজা পণ্য কিনতে হবে এবং উচ্চ প্রক্রিয়াজাত খাবার ও পানীয় এড়িয়ে চলতে হবে।
১১. প্লাস্টিকের বদলে পুনর্ব্যবহারযোগ্য ব্যাগ ব্যবহার করতে হবে।
তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে সুস্বাস্থ্যের সেবা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের চিকিৎসাসেবা যথেষ্ট প্রশংসার দাবিদার।বাংলাদেশে করোনার মহামারী ভয়াবহতা কাটিয়ে উঠতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহযোগিতায় বাংলাদেশ স্বাস্থ্য সেবার কার্যালয় গুলো গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশ বেশ ভালোভাবেই করোনার ভয়াবহতা কাটিয়ে উঠতে পেরেছিল। করোনা মোকাবিলায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেন। তবে একথা সত্য, তার নিরলস পরিশ্রম ও অদম্য মনোবলের কারণে বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের আগেই করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশ ইতিবাচক সাফল্য অর্জন করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যা প্রায় ৩৪ কোটি, যেখানে বাংলাদেশে জনসংখ্যা মাত্র ১৭ কোটি। কোভিড-১৯-এর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত মারা গেছে প্রায় ৯ লাখ মানুষ, সেখানে বাংলাদেশে মারা গেছে ২৯ হাজার। আয়তনের দিক দিয়েও বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় অনেক ছোট। সে তুলনায় করোনা মোকাবিলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বাংলাদেশ অনেক ভালো অবস্থানে আছে। জার্মানির আয়তন বাংলাদেশের প্রায় তিনগুণ আর জনসংখ্যা বাংলাদেশের অর্ধেক। অপরদিকে নিউজিল্যান্ডের আয়তন বাংলাদেশের দ্বিগুণ আর জনসংখ্যা বাংলাদেশের প্রায় পঁয়ত্রিশ ভাগের এক ভাগ। সে হিসাবে বলা যায়, করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশের তুলনায় উল্লেখিত দেশ তিনটির কাজ সহজ ছিল। মূলত সীমিত আয়তন ও বিপুল জনসংখ্যার বাংলাদেশের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত দৃঢ়চিত্তে তা মোকাবিলা করে চলেছেন। কিছুদিন আগে গণটিকা কর্মসূচিতে এক দিনে প্রায় এক কোটি ২০ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে। এত বিপুলসংখ্যক মানুষকে একদিনে টিকা দেওয়া সম্ভব হয়েছে একমাত্র মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে। বিশ্বের ১১৭টি দেশের মধ্যে ৪২টি দেশে জনসংখ্যার পরিমাণ এক কোটি ২০ লাখ। যেখানে ৪২টি দেশে সর্বমোট জনসংখ্যাই এক কোটি ২০ লাখ, সেখানে আমরা একদিনে এক কোটি ২০ লাখ মানুষকে টিকা দিয়ে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম দেশ হিসাবে সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছি।
সর্বোপরি বলা যায় পৃথিবীর প্রতেকটা মানুষকে তার নিজ নিজ অবস্থান থেকে স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন হতে হবে।
#cuss
#WorldHealthDay2023
References :
1.https://www.jugantor.com/todays-paper/sub-editorial/538689/%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%AC-%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A5%E0%A7%8D%E0%A6%AF-%E0%A6%A6%E0%A6%BF%E0%A6%AC%E0%A6%B8-%E0%A6%93-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%8F%E0%A6%B8%E0%A6%8F%E0%A6%AE%E0%A6%8F%E0%A6%AE%E0%A6%87%E0%A6%89
2.https://www.hazabarolo.com/world-health-day/
Content Credit :
✏️Written By :
Umma Habiba Eshita
General Member, CUSS
Department Of Zoology
Session : 2019-20
Poster Credit :
Mohammad Mushfiqur Rahman
General Member, CUSS
Department of Oceanography
Session: 2019-20