সকাল ১১.০২ টায় ১৬৫০ ফিট উচ্চতা হতে “Fat Man” নাগাসাকিতে বিস্ফোরিত হয়
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সেই ভয়াবহ পারমাণবিক বোমা হামলার কথা কার কাছেই বা অজানা? জাপানের নাগাসাকিতে বোমা হামলা এর মধ্যে অন্যতম, যে চিত্র দেখে আজও মানবহৃদয় কেঁপে ওঠে। নাগাসাকিতে কখন ও কিভাবে হামলা হয়েছিল?
হিরোশিমায় বোমা হামলার তিনদিন পর আমেরিকা ৯ই আগস্ট, ১৯৪৫ সালে B-29 বোমারু বিমান তিনিয়ান হতে “Fat Man” নামক প্লুটোনিয়াম বিস্ফোরণ বোমা নিয়ে জাপানে হামলার উদ্দেশ্যে ৩.৪৭ টায় রওনা দেয়।
তাদের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল কোকুরা আর্সেনালে হামলা।কারণ কোকুরা শহরের নিকটেই ছিল অস্ত্র কারখানার এক বিশাল সম্ভার। তবে প্রচুর ধোঁয়া এবং কুয়াশায় সঠিক গন্তব্যে বোমা ফেলা সম্ভব হয় নি।
তারপর তারা দ্বিতীয় টার্গেট নাগাসাকির দিকে অগ্রসর হয়। মেঘে ঢাকা থাকলেও আমেরিকার এয়ারক্র্যাফ্ট ক্যাপ্টেন কারমিট বিহান স্টেডিয়ামের সামান্য দৃশ্য দেখতে পান এবং সেই লক্ষ্যে বোমাটি ফেলে দেন। সকাল ১১.০২ টায় ১৬৫০ ফিট উচ্চতা হতে “Fat Man” নাগাসাকিতে বিস্ফোরিত হয়।
নাগাসাকিকে কেন টার্গেট করা হয়েছিল?
নাগাসাকি ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য কেন্দ্র এবং একটি প্রধান বন্দর,আন্তর্জাতিক আমদানি ও রপ্তানিতে যার অবদান ছিল অসামান্য।যখন বোমাটি বিস্ফোরণ হয়, তখন প্রায় ২ লক্ষ মানুষ ছিল। ধারণা করা হয়, বিস্ফোরণের প্রভাব ২১ কিলোটন,যা হিরোশিমাতে বিস্ফোরিত বোমার ৪০ শতাংশ বেশি।
বোমা হামলার ফলে কি ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছিল?
“Fat man” বোমাটি Little Boy হতে বেশি শক্তিশালী হলেও নাগাসাকিতে হিরোশিমার মত এত ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে নি। নাগাসাকির পাহাড় এবং তার ভৌগোলিক অবস্থান শহরকে বোমার বিস্ফোরণ, উত্তাপ এবং বিকিরণ হতে রক্ষা করেছিল।
৪৩ বর্গ মাইল এলাকা জুড়ে এ বিস্ফোরণের প্রভাব পড়ে।প্রায় ৮.৫ বর্গ মাইল এলাকা পানির নিচে ডুবে যায়। বিস্ফোরণের এক কিলোমিটার এলাকায় মানুষ এবং প্রাণিকুল সাথে সাথেই মারা যান।
১.৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে সব ঘর বাড়ি উজাড় হয়ে যায়। ৫২০০০ ঘরের মধ্যে ১৪০০০ ধ্বংস হয়ে যায় এবং ৫৪০০ টি ঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
পানি সরবরাহের লাইনের সংযোগ বন্ধ হয়ে যায় এবং দীর্ঘ ছয় সপ্তাহ মানুষ পানির স্বল্পতার কারনে ভোগে। নাগাসাকি হামলায় ৪০,০০০ মানুষের মৃত্যু হয় এবং ৬০০০০ মানুষ আহত হয়।
কিভাবে জাপানে পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া কার্যকর হয়?
এই ধ্বংসযজ্ঞ থেকে পুনরুদ্ধার হওয়ার পথ সুগম ছিল না। সেখানে ২২ টি ত্রাণ কেন্দ্র ছিল এবং ৩২৭ জন কর্মী কেন্দ্রগুলোতে সেবা প্রদানে নিয়োজিত ছিলেন।
অনেকাংশেই ভূমিকা পালন করে আমেরিকা। তারা জাপান আত্মসমর্পণের পর জাপান সেনাবাহিনীদের শাস্তি দেয়, অতঃপর শান্তি চুক্তি সই করে।উপস্থিত ৫২ টি দেশের মধ্যে ৪৯টি দেশ চুক্তিতে সই করে। শুরু হয় জাপানে পুনরুদ্ধারের কাজ।
আমেরিকা প্রথমে জাপানের সংবিধান ও অর্থনৈতিক অবকাঠামোতে কিছুটা পরিবর্তন করে এবং সমন্বয় করে জাপানকে বিশ্ব অর্থনীতির জন্য তৈরি করে তোলে।
জাপানের অর্থনীতির পুনরাবির্ভাব ঘটার একটি প্রধান কারণ কাঁচামাল উৎপাদন, যেমনঃ স্টীল,কয়লা, তুলা ইত্যাদি।
দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নের আরেকটি প্রধান কারণ কোরিয়া যুদ্ধ। কোরিয়ার সাথে যুদ্ধের সময় জাপান আমেরিকাকে অস্ত্র সরবরাহ করেছিল।
এছাড়াও আমেরিকা জাপানের নানা পণ্য আমদানি করে তাদের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে ভূমিকা রাখে। প্রায় তিন দশকের মধ্যেই জাপান ঘুরে দাঁড়ায় এবং ইস্ট এশিয়ার প্রথম উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
References:
1.https://www.osti.gov/…/manhatt…/Events/1945/nagasaki.htm
2.Decision to Drop the Atomic Bomb | Harry S. Truman https://www.trumanlibrary.gov/…/decision-drop-atomic-bomb
3.https://history.state.gov/…/1945-1952/japan-reconstruction
4.https://www.grips.ac.jp/teacher/oono/hp/lecture_J/lec10.htm
???? Content Credit :
Written by :
Sadia Osman Lorin
General Member
Team: Phoenix
Institute of Marine Sciences
Session: 2018-19
Poster Credit :
Jannatul Maoua Saima
General Member, CUSS
Team : Phoenix
Department Of Computer Science and Engineering
Session : 2019-20
Tag:cuss