“স্টিফেন উইলিয়াম হকিং এর মৃত্যুদিবস”
স্টিফেন উইলিয়াম হকিং, কে না জানে এই জগৎবিখ্যাত বিজ্ঞানীর অবদানের কথা। গণিত, পদার্থবিজ্ঞান ছাড়াও অন্যান্য শাখায় তার অবদান অতুলনীয়। তাঁকে বিশ্বের সর্বকালীন তাত্ত্বিক পদার্থবিদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বাবার ইচ্ছায় ডাক্তারি না পড়ে পদার্থবিজ্ঞানে পড়া স্টিফেন উইলিয়াম হকিংকে বলা হয় আইন্সটাইনের পরে পৃথিবীতে সবচেয়ে প্রতিভাবান বিজ্ঞানী। আসুন এই বিখ্যাত কিংবদন্তীর প্রয়াণ দিবসে তাঁর জীবনবৃত্তান্ত সম্পর্কে সামান্য জানার প্রচেষ্টা করি।
⭐ জন্ম : বিখ্যাত পদার্থবিদ স্টিফেন উইলিয়াম হকিং জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪২ সালের ৮ জানুয়ারি ইংল্যান্ডে। তার বাবা ড: ফ্রান্ক হকিং একজন জীববিজ্ঞান গবেষক এবং মা ইসোবেল হকিং একজন রাজনৈতিক কর্মী। হকিং পরিবার তখন উত্তর লন্ডনে থাকতেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন হকিং গর্ভে আসেন এবং নিরাপত্তার খাতিরে তারা অক্সফোর্ডে চলে যান। হকিং এর জন্মের পর তারা আবার লন্ডনে ফিরে আসেন। হকিং এর পরিবারে তিনি একা নন, ফিলিপ্পা এবং মেরি নামে তার দুইবোন এবং এডওয়ার্ড নামে এক পালকপুত্র ও ছিল।
শিক্ষাজীবন : ১৯৫০ সালের দিকে হকিং পরিবার সেন্ট অ্যালবানসে চলে যান। ১৯৫০-১৯৫৩ অব্দি হকিং সেন্ট অ্যালবানসে একটি মেয়েদের স্কুলে পড়াশুনা করেন (সে সময় ১০বছর অব্দি মেয়েদের স্কুলে পড়াশুনা করার বিশেষ অনুমতি ছিল)। এরপরে তিনি স্কুল পরিবর্তন করেন। হকিং পড়াশুনায় মোটামুটি ভাল ছিলেন তবে বিজ্ঞানে হকিংয়ের অত্যন্ত আগ্রহ ছিল। পদার্থ এবং গণিত বিষয়ে তাঁর আগ্রহ তুখোড় ছিল এবং পরবর্তী সময়ে তিনি গণিত এবং পদার্থবিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন এবং ক্যাম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হোন।
বৈবাহিক জীবন : হকিংয়ের অধ্যাপনার সময় জেন ওয়াইল্ড নামক এক মেয়ের সাথে তাঁর পরিচয় হয়। ১৯৬৫ সালে তারা বিয়ে করেন এবং এই দম্পতির তিনটি সন্তান ছিল। ১৯৯৫ সালের দিকে তারা আলাদা হয়ে যান। পরবর্তীতে তিনি তাঁর সেবাকারী নার্সকে বিয়ে করেন কিন্তু তিনি এই সম্পর্কের ইতি টানেন ২০০৬ সালে।
গবেষণা এবং অবদান : হকিংয়ের প্রধান গবেষণার বিষয় ছিল কসমোলজি ও কোয়ান্টাম মধ্যাকর্ষ। ১৯৬০ এর দশকে বন্ধু পেনরোজ এবং হকিং আইন্সটাইনের আপেক্ষিকতার তত্ত্ব থেকে একটি নতুন মডেল তৈরি করেন যেটি ‘পেনরোজ-হকিং’ তত্ত্ব নামে পরিচিত। হকিং প্রথম অনিশ্চিয়তার তত্ত্ব ব্ল্যাক হোলের ঘটনা প্রয়োগ করে দেখান যে, ব্ল্যাক হোল থেকে বিকিরিত হচ্ছে কণাপ্রবাহ এবং এই বিকিরণ এখন ‘হকিং বিকিরণ’ নামে অভিহিত। এছাড়াও ‘বিগ-ব্যাং থিওরি’, ‘থিওরি অভ রিলেটিভিটি’ এবং বিভিন্ন ধরণের বৈজ্ঞানিক বই তিনি লিখেছেন তার মধ্যে ‘এ ব্রিফ হিস্ট্রি অভ টাইম’ উল্লেখযোগ্য।
মৃত্যু : হকিংয়ের বয়স যখন ২১ বছর, মোটর নিউরোনের এমায়োট্রপিক ল্যাটেরাল স্ক্লেরোসিস নামক রোগে আক্রান্ত হন। ডাক্তার জানিয়েছিলেন তিনি হয়তো দুইবছরের বেশি বাচবেন না। হকিং এসব কথায় কর্ণপাত না করে গবেষণার কাজে লেগে থাকেন। তিনি মনে করতেন, যদি তিনি ডাক্তারের কথা শুনে ভেঙ্গে পড়তেন তাহলে সেই মুহুর্তেই তার মানসিক মৃত্যু ঘটতো।
১৯৬০ দশক থেকেই তিনি হুইল চেয়ার ব্যবহার করতেন। ১৯৮৫ সালে নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসলে তিনি বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেন। এরপর কিছু সময় ইংরেজি শব্দযুক্ত বোর্ডের মাধ্যমে চোখের ইশারায় ভাব প্রকাশ করতেন। এরপর স্পিচ জেনেরেটিং ডিভাইস যুক্ত স্বয়ংক্রিয় কম্পিউটারের মাধ্যমে ভাব প্রকাশ করতেন এবং মৃত্যু অব্দি ব্যবহার করে এসেছেন। ২০১৮ সালের ১৪ মার্চ ৭৬ বছর বয়সে এই কিংবদন্তি নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন। এই দিনটি ‘পাই-দিবস’ হিসেবে পরিচিত।
#cuss
#stephenhawking
References :
1.https://www.britannica.com/biography/Stephen-Hawking
2.https://www.space.com/15923-stephen-hawking.html
3.https://www.hawking.org.uk/
4.https://www.biography.com/scientists/stephen-hawking
5.https://royalsocietypublishing.org/doi/10.1098/rsbm.2019.0001
✒️Content Credit :
✏️Written By :
Mehebuba Parvin
General Member
Department of Genetic Engineering and Biotechnology.
Session : 2020-21.
Poster Credit :
Raisa Nuzhat
Assistant IT Secretary
Computer Science and Engineering
Session : 2019-20.