বিশ্বসেরা মহান বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের ৬৮ তম মৃত্যু বার্ষিকী
আজ ১৮ এপ্রিল, ২০২৩- বিশ্বসেরা মহান বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের ৬৮ তম মৃত্যু বার্ষিকী।
বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের নাম জানেন না এমন মানুষ হয়ত খুব কমই আছে বর্তমান পৃথিবীতে। পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ তাদের জীবনকালে অন্তত একবার হলেও এই মহান বিজ্ঞানীর নাম শুনে থাকবে। পৃথিবীর সর্বকালের সেরা বিজ্ঞানীদের নাম স্মরণ করতে গেলেও বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের নাম মাথায় আসবে না এমনটা হতেই পারে না। বিজ্ঞানী আইনস্টাইন হলেন বিশ্বের সবথেকে পরিচিত, সম্মানজনক একজন পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি তার বিজ্ঞান ভিত্তিক গবেষণা, কাজ, ও আপেক্ষিকতার তত্ত্ব দিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন সমগ্র বিশ্বব্যাপী এবং বিজ্ঞানী হিসেবে পৃথিবীকে দিয়ে গেছেন এক নতুন মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি। তাইতো এই মহান বিজ্ঞানীর মৃত্যুর এত বছর পরও সর্বদা তিনি অমর হয়ে আছেন এই পৃথিবীতে, বিজ্ঞানমনস্ক সকল মানুষের মনে, বিজ্ঞানের ইতিহাসে, গবেষণায় ও সর্বত্র। বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের জন্ম না হলে হয়ত আজকের পৃথিবীতে বিজ্ঞানের এত গবেষণা, সৃষ্টি, আবিষ্কার সব অসম্পূর্ণই থেকে যেতো।
অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের সংক্ষিপ্ত পরিচয়:
বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের পারিবারিক ডাকনাম ছিলো আইনস্টাইন। তিনি ঐ নামেই সকলের কাছে অধিক পরিচিত। তিনি ছিলেন স্বভাবতই একজন পদার্থ বিজ্ঞানী, যিনি আপেক্ষিকতার তত্ত্ব, কোয়ান্টাম মেকানিক্স, ভর-শক্তি সমতা সূত্র, ব্রাউনিয়ান গতি, বলবিদ্যাসহ বিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে রেখে গেছেন নিজে অবিস্মরণীয় মহৎ অবদান।
জন্ম: এই মহান বিজ্ঞানী ১৮৭৯ খ্রীস্টাব্দে ১৪ মার্চ তারিখে বর্তমান জার্মানির ওয়ার্টেমবার্গ রাজ্যের উলম শহরে একটি মধ্যবিত্ত ইহুদী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। কিন্তু জন্মের সময় তাঁর মাথার আকার ছিলো কিছুটা অস্বাভাবিকভাবে বড়। তাঁর মাতার নাম ছিলো পাউলিন আইনস্টাইন এবং পিতার নাম ছিলো হারমান আইস্টাইন। প্রাপ্তবয়সে তিনি শারীরিক উচ্চতায় ছিলেন ৫ ফুট ৭ ইঞ্চির অধিকারী।
শৈশবে তিনি ছিলেন খুবই শান্তশিষ্ট ও অল্পভাষী, এবং প্রায়শই নিজের এক আলাদা চিন্তার জগতে হারিয়ে যেতেন। তিনি আড়াই বছর বয়সেও কথা বলতে শিখেননি এবং পরবর্তীতেও খুবই ধীর কথা বলতেন বলে ধারণা করা হতো তার ভাষা প্রকাশে প্রতিবন্ধকতা ছিলো। কিন্তু তিনি ছিলেন ছোটবেলা থেকেই খুবই কৌতুহলী এবং শিখার প্রতি প্রচন্ড রকমের আগ্রহী। বিজ্ঞান ও গণিত সংক্রান্ত বিষয়ে ছিলো তাঁর বিশেষ আকর্ষণ। তিনি ধাঁধা সমাধান ও বিজ্ঞান বিষয়ক মডেল তৈরি করতে ভীষণ ভালোবাসতেন।
☑️তাঁর স্ত্রীর নাম ছিলো এলসা আইনস্টাইন, মিলেভা মারিক।
শিক্ষা : ১৯০০ সালে সুইস ফেডারেল পলিটেকনিক থেকে স্নাতক ডিগ্রি এবং ১৯০৫ সালে জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন তিনি।
বিদ্যালয়: লুইটপোল্ড জিমনেসিয়াম
বিশ্ববিদ্যালয়: জুরিখের সুইস ফেডারেল পলিটেকনিক স্কুল
☑️তিনি ছিলেন একজন জার্মান নাগরিক এবং ক্যাথলিক ও ইহুদি ধর্মের অধিকারি।
মৃত্যু:অ্যাওর্টিক অ্যানিউরিজমের কারণে শারীরিক অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণে বিজ্ঞানী আইনস্টাইন ১৯৫৫ সালের ১৮ এপ্রিল মাত্র ৭৬ বছর বয়সে প্রিন্সটন, নিউ জার্সি, ইউনাইটেড স্টেটের একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
☑️এই মহান বিজ্ঞানী সম্পর্কে এই সকল সাধারণ তথ্য তো আমরা কম বেশি সকলেই জানি। কিন্তু এই বিজ্ঞানীর মৃত্যু এবং মৃত্যু পরবর্তীকালীন তার শরীরকে নিয়ে ঘিরে আছে অনেক রহস্য, যা হয়ত আমাদের অনেকেরই অজানা।
বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের মৃত্যু রহস্য :
১৯৫৫ সালের ১৫ এপ্রিল যখন হঠাৎ করে হৃদযন্ত্রের নিকটবর্তী একটা রক্তনালী ফেটে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণে বিজ্ঞানী আইন্সটাইন গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন, তখন তাকে অস্ত্রোপচারের জন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলে তিনি বলেন, “I want to go when I want to go. It is tasteless to prolong life artificially. I have done my share; it is time to go. I will do it elegantly.” তারপর যখন তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে তাকে প্রিন্সটন হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকের চেষ্টা, চিকিৎসা ও অস্ত্রোপচারের পরও এই মহান বিজ্ঞানীকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। তিনি ১৯৫৫ সালের ১৮ এপ্রিল মধ্যরাত্রি ১ টা ১৫ মিনিটে ঐ হাসপাতালেই পরোলোকগমন করেন।
☑️ তাঁর মৃত্যুর ৮ ঘন্টার মধ্যে তাঁর মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয় এবং পরবর্তীতে তাঁর মৃতদেহের শেষ কৃত্য সম্পন্ন হয়। মৃত্যু পূর্ববর্তী তাঁরই করে যাওয়া অনুরোধে তাঁর মৃতদেহ পুড়িয়ে ফেলা হয় এবং তাঁর অস্থি অবশেষ একটি অজ্ঞাত স্থানে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এছাড়াও এই মহান বিজ্ঞানী তাঁর মৃত্যুর পূর্বে তাঁরই সেবারত নার্সকে জার্মান ভাষায় কিছু কথা বলে যান। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, ঐ নার্স জার্মান ভাষা না জানায়, এই মহান বিজ্ঞানীর বলা শেষ বাক্যগুলো সম্পর্কে জানা আর সম্ভব হয়নি।
☑️অপরদিকে, ময়নাতদন্ত চলাকালীন সকল লোকচক্ষুর আড়ালেই ঘটে যায় এক বিশাল রহস্যময় ঘটনা। বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের মৃতদেহের করোটি থেকে চুরি হয় তার মস্তিষ্ক এবং চক্ষু! আর এই ঘৃণ্য কাজটি করেন ময়নাতদন্তে দায়িত্বরত প্রিন্সটন হাসপাতালেরই একজন প্যাথোলজিস্ট থমাস হার্ভে। যা তাঁর মৃতদেহের শেষকার্যের সময় বা পরও কারো জানা হয়নি, এমনকি জানতেন না তাঁর পরিবারের সদস্যরাও।
☑️পরবর্তীতে বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের মৃত্যুর দীর্ঘ অনেক বছর পর এই লুকায়িত সত্যের উন্মোচন ঘটে। চিকিৎসক থামাস হার্ভেই তার একটি ইন্টারভিউতে কথার ফাঁকে স্বীকার করে ফেলেন সত্যটি এবং তার বাড়ির ল্যাবে সন্ধান করে প্রমাণও মিলে এই সত্যের। চিকিৎসক থমাস হার্ভে বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের মস্তিষ্ককে ২৪০ খন্ডে বিভক্ত করে সেই টুকরোগুলো এবং তাঁর চক্ষুগুলোকে আলাদা আলাদা জারে ফরমালিন দিয়ে সংরক্ষিত করে রাখে। এছাড়াও তিনি মস্তিষ্কের টুকরোগুলো থেকে অনেক গুলো স্লাইড তৈরি গবেষণার মাধ্যমে সেগুলোর গঠনগত বিশেষত্ব জানার চেষ্টা করেন। সেই উদ্দেশ্যে তিনি এই স্লাইডগুলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীদের কাছেও গবেষণার জন্য পাঠিয়েছিলেন। পরবর্তীতে একজন রিপোর্টারের মাধ্যমে এই সত্য উন্মোচন হওয়ায়, চিকিৎসক থমাস হার্ভের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। কিন্তু যেহেতু, গবেষণার কাজে তিনি এই কাজটি করেছেন সেজন্য বিজ্ঞানী আইন্সটাইনের ছেলের সম্মতিক্রমে তাকে আইনী শাস্তি থেকে মুক্তি দেওয়া হয়; তবে তিনি তার এই ঘৃণ্য অপরাধের কারণে আজীবনের জন্য তার মেডিকেল লাইসেন্স হারিয়ে ফেলেন।
☑️পরবর্তীতে বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের মস্তিষ্কের কিছু টুকরো এবং স্লাইড Philadelphia’s Mütter Museum এর অধীনে সংরক্ষণ করে রাখা হয়।
#CUSS
#DEATH_OF_EINSTEIN
References:
1)https://www.bengaliportal.com/albert-einstein-biography…/
2)https://www.amnh.org/…/einsteins-legacy-the-final-chapter
3)https://allthatsinteresting.com/albert-einstein-death
4)https://eisamaygold.timesgroup.com/…/stol…/1663679134396
5)https://rinconeducativo.org/…/18-de-abril-de-1955…/
????Content Credit :
✏️ Written By :
Kakon Saha
General Member, CUSS
Team : Pterosaurs
Institute of Marine Sciences
Session : 2018-19
Poster Credit :
Raisa Nuzhat
Assistant IT Secretary,
Department of Computer Science and Engineering
Session : 2019-20
Tag:cuss